১০মার্চ২০২২ সম্পাদকীয় পড়লে মনে হতে পারে, এটা কোন বাজারী কাগজের লেখা কিনা! তবে লেখক মশায় বাজারী কাগজকেও টেক্কা দিয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। যুদ্ধ অনভিপ্রেত। যুদ্ধে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, বিশেষ করে বৃদ্ধবৃদ্ধা শিশু। লেখক মশায় আবেগপূর্ণ ভাষায় তা ব্যক্ত করেছেন। ২০১৪ সালে ২০ফেব্রুয়ারী কিয়েভে মার্কিন নেতৃত্বে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করে নব্য নাৎসি ও অতি দক্ষিণপন্থী সরকার বসায়। তাদের নেতৃত্বে সংঘটিত বে-আইনী কিয়েভ সরকার ৮বছর ধরে দনবাস অঞ্চলে সেনা ও নব্য নাৎসি 'আজোভ' বাহিনীর সাহায্যে নির্বিচারে ধ্বংস ও গণহত্যা চালাচ্ছে, সে বিষয়ে কোন উদ্বেগ বা উল্লেখ দেখা যায় নি। বলি হয়েছে ১৪ হাজারের মত মানুষ, তাদের মধ্যে অধিকাংশ বৃদ্ধবৃদ্ধা ও ''শিশু''-যাদের বেশির ভাগই দুগ্ধপোষ্য। কিয়েভের অবৈধ সরকার এসেই দেশের সংবিধান বাতিল করে, রুশভাষায় লেখাপড়া নিষিদ্ধ হয়। দনবাসে অভ্যুত্থান বিরোধী শান্তিপূর্ণ মানুষের উপর সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করে। ট্যাংক ও সামরিক বিমান নামান হয়। নির্বাচিত সরকারের উচ্ছেদ বিরোধী জমায়েতে, নব্য নাৎসি হামলায় প্রায় ৪০০জন অগ্নিদগ্ধ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।তার পরেই দনবাসের মানুষ দনেতস্ক ও লুগান্সক গণপ্রজাতন্ত্রে সংগঠিত হয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধে সামিল হয়। ক্রিমিয়ার পার্লামেন্ট অনুষ্ঠিত গণভোটে ৯৬.৭৭% মানুষ রাশিয়াতে যোগ দেওয়ার পক্ষে মত দেয় (২.৫% বিরোধী)।
দনবাস ও ক্রিমিয়ার প্রতিরোধ মূলত মাতৃভাষা সংস্কৃতি ও জাতিসত্ত্বা রক্ষার লড়াই। ইউক্রেনে ইউক্রেনিয় ও রুশ- উভয় ভাষাতেই প্রাথমিক থেকে উচ্চতম পর্যায়ে শিক্ষার সুযোগ ছিল। সোভিয়েত শিক্ষানীতির উচ্ছেদ হয় নি তখনও পর্যন্ত।/ পটভূমিঃ সোভিয়েত ইউনিয়ন ধ্বংসের নেতা গর্বাচেভ ও তার সাঙ্গপাঙ্গেরা ছিল অন্ধ মার্কিনভক্ত, যাদের কাছে দেশের থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের নির্দেশ অনুযায়ী চলাটাই ছিল একমাত্র কাজ। যার জন্য পরিকল্পিতভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন রক্ষার রক্ষাকবচ একে একে ভাঙতে থাকে ও শেষ অবধি সোভিয়েত সংবিধানের ৬ নং ধারা বাতিল করতে সফল হয়। জনগণকে ''গণতন্ত্র'' শেখানোর জন্য সিয়াইএর বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে দেশে ঘাঁটি গাড়তে দেয়।/শেষ লগ্নে জার্মানির একীকরণের সময় (জার্মানির নিরপেক্ষতাও দাবী করে নি) মার্কিন ব্রিটেন ফ্রান্স প্রতিশ্রুতি দেয় সামরিক জোট ন্যাটো এক ইঞ্চিও সম্প্রসারিত হবে না। ওয়ারশ সংগঠন বাতিল হয়, কিন্তু ন্যাটোর অবলুপ্তি দাবী করে নি গর্বাচেভ। ইয়েত্সিন আসে। তখন সিয়াইএ পরিবৃত হয়ে মার্কিনী দাবীমত কাজ করতে থাকে। সরকারী সম্পত্তির লুটপাট শুরু হয়। তখন মাফিয়া রাজ কায়েম হয়। বিশ্বের কাছে দেশটা হয়ে দাঁড়ায় উপহাসের পাত্র।
এই বেহাল অবস্থায়, জনগণের চাপে, পুতিনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয় ইলেত্সিন। আস্তে আস্তে সুস্থিতি আনতে নানাভাবে চেষ্টা করে ।একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আনতে সক্ষম হয়। রাশিয়ার নেতৃবৃন্দ পশ্চিমীদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসে অবিচল।তারা ইতিমধ্যে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সহযোগী হয়েছে। OSCE(Organisation for Security &Cooperation in Europe)র সদস্য হয়েছে। এতদিনে বিনাবাধায় ইরাক লিবিয়া লেবানন আফগানিস্তান ধ্বংস চলেছে। সিরিয়া মার্কিন সৃষ্ট জিহাদি বাহিনী প্রায় দখল করে নিয়েছে। রুশ নেতৃত্বের মধ্যে মার্কিন মোহমুক্তি আসতে শুরু করেছে। পুতিন প্রথমেই বুঝতে শুরু করে পশ্চিমী ভাওতার স্বরূপ। তারা দেখছে একে একে পূর্বতন সোভিয়েত রিপাবলিক ও ওয়ারশভুক্ত দেশগুলিকে ন্যাটোয় সামিল করছে সব প্রতিশুতি ভেঙে, রাশিয়ার অনুরোধ উপরোধ আপত্তির পাত্তা না দিয়ে। প্রথমে পোল্যাণ্ড ও পরে অন্য সব দেশ। বাকি থাকে জর্জিয়া মলদোভা ও ইউক্রেন। এদের সদস্য করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মলদোভায় একটা অংশ স্বাধীনভাবে থাকার জন্য ন্যাটোর সদস্যপদ আটকে থাকে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর মার্কিন গণতন্ত্রের উৎসব নানা ''রঙ'এর তথাকথিত মহা''বিপ্লব'' শুরু হয় পূর্বতন সো ইউ-এর অঙ্গ প্রজাতন্ত্রগুলিতে। সেই ভাবে ইউক্রেনেও হয়। কিন্তু নির্বাচনে ইয়ান্যুকোভিচ নির্বাচিত হয়। কিন্তু ''রঙিন'' পন্থীদের আপত্তিতে বাতিল হয়। পরে নির্বাচিত হয় ইউলিয়া তিমোশেংকো। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তিমোশেংকো পরের নির্বাচনে পরাজিত হয় ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের কাছে। দেশ প্রচণ্ড আর্থিক সংকটে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগ দেবার জন্য 'আন্দোলন' আরম্ভ হয়ে গেছে। আই এম এফের শর্ত মেনে ঋণ নিলে, জিনিষপত্র দাম বেড়ে যাবে তিনগুণেরও বেশি। জনমত সমীক্ষা করে দেখা গেল প্রায় ৬৬% ওই পরিস্থিতি মানতে অনিচ্ছুক।তখন রাশিয়ার সাথে চুক্তির মাধ্যমে সহজ সর্তে সামান্য সুদে প্রায় ৯ বিলিয়ন রুবল ঋণ নেয়। ২০১৪ সাল । সোচিতে শীতকালীন অলিম্পিক চলছে। মার্কিন নেতৃত্বে( বিদেশ দপ্তরের সহসচিব ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যাণ্ড) সরকার ফেলার তোড়জোড় অন্তিম ধাপে আসে। শেষ পর্যন্ত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কিয়েভে নব্য নাৎসি ও উগ্র দক্ষিণ পন্থীদের সরকার বসায়। এসেই তারা সংবিধান বাতিল করে। রুশ ভাষা নিষিদ্ধ হয় ও একমাত্র ইউক্রেনীয় ভাষাতে শিক্ষার ফতোয়া জারী হয়। (মনে পড়তে পারে উর্দু, একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের শিক্ষার মাধ্যম ও রাষ্ট্রভাষা)।
১০মার্চ২০২২ সম্পাদকীয় পড়লে মনে হতে পারে, এটা কোন বাজারী কাগজের লেখা কিনা! তবে লেখক মশায় বাজারী কাগজকেও টেক্কা দিয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। যুদ্ধ অনভিপ্রেত। যুদ্ধে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, বিশেষ করে বৃদ্ধবৃদ্ধা শিশু। লেখক মশায় আবেগপূর্ণ ভাষায় তা ব্যক্ত করেছেন। ২০১৪ সালে ২০ফেব্রুয়ারী কিয়েভে মার্কিন নেতৃত্বে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করে নব্য নাৎসি ও অতি দক্ষিণপন্থী সরকার বসায়। তাদের নেতৃত্বে সংঘটিত বে-আইনী কিয়েভ সরকার ৮বছর ধরে দনবাস অঞ্চলে সেনা ও নব্য নাৎসি 'আজোভ' বাহিনীর সাহায্যে নির্বিচারে ধ্বংস ও গণহত্যা চালাচ্ছে, সে বিষয়ে কোন উদ্বেগ বা উল্লেখ দেখা যায় নি। বলি হয়েছে ১৪ হাজারের মত মানুষ, তাদের মধ্যে অধিকাংশ বৃদ্ধবৃদ্ধা ও ''শিশু''-যাদের বেশির ভাগই দুগ্ধপোষ্য। কিয়েভের অবৈধ সরকার এসেই দেশের সংবিধান বাতিল করে, রুশভাষায় লেখাপড়া নিষিদ্ধ হয়। দনবাসে অভ্যুত্থান বিরোধী শান্তিপূর্ণ মানুষের উপর সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করে। ট্যাংক ও সামরিক বিমান নামান হয়। নির্বাচিত সরকারের উচ্ছেদ বিরোধী জমায়েতে, নব্য নাৎসি হামলায় প্রায় ৪০০জন অগ্নিদগ্ধ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।তার পরেই দনবাসের মানুষ দনেতস্ক ও লুগান্সক গণপ্রজাতন্ত্রে সংগঠিত হয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধে সামিল হয়। ক্রিমিয়ার পার্লামেন্ট অনুষ্ঠিত গণভোটে ৯৬.৭৭% মানুষ রাশিয়াতে যোগ দেওয়ার পক্ষে মত দেয় (২.৫% বিরোধী)।
উত্তরমুছুনদনবাস ও ক্রিমিয়ার প্রতিরোধ মূলত মাতৃভাষা সংস্কৃতি ও জাতিসত্ত্বা রক্ষার লড়াই। ইউক্রেনে ইউক্রেনিয় ও রুশ- উভয় ভাষাতেই প্রাথমিক থেকে উচ্চতম পর্যায়ে শিক্ষার সুযোগ ছিল। সোভিয়েত শিক্ষানীতির উচ্ছেদ হয় নি তখনও পর্যন্ত।/ পটভূমিঃ সোভিয়েত ইউনিয়ন ধ্বংসের নেতা গর্বাচেভ ও তার সাঙ্গপাঙ্গেরা ছিল অন্ধ মার্কিনভক্ত, যাদের কাছে দেশের থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের নির্দেশ অনুযায়ী চলাটাই ছিল একমাত্র কাজ। যার জন্য পরিকল্পিতভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন রক্ষার রক্ষাকবচ একে একে ভাঙতে থাকে ও শেষ অবধি সোভিয়েত সংবিধানের ৬ নং ধারা বাতিল করতে সফল হয়। জনগণকে ''গণতন্ত্র'' শেখানোর জন্য সিয়াইএর বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে দেশে ঘাঁটি গাড়তে দেয়।/শেষ লগ্নে জার্মানির একীকরণের সময় (জার্মানির নিরপেক্ষতাও দাবী করে নি) মার্কিন ব্রিটেন ফ্রান্স প্রতিশ্রুতি দেয় সামরিক জোট ন্যাটো এক ইঞ্চিও সম্প্রসারিত হবে না। ওয়ারশ সংগঠন বাতিল হয়, কিন্তু ন্যাটোর অবলুপ্তি দাবী করে নি গর্বাচেভ। ইয়েত্সিন আসে। তখন সিয়াইএ পরিবৃত হয়ে মার্কিনী দাবীমত কাজ করতে থাকে। সরকারী সম্পত্তির লুটপাট শুরু হয়। তখন মাফিয়া রাজ কায়েম হয়। বিশ্বের কাছে দেশটা হয়ে দাঁড়ায় উপহাসের পাত্র।
উত্তরমুছুন
উত্তরমুছুনএই বেহাল অবস্থায়, জনগণের চাপে, পুতিনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয় ইলেত্সিন। আস্তে আস্তে সুস্থিতি আনতে নানাভাবে চেষ্টা করে ।একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আনতে সক্ষম হয়। রাশিয়ার নেতৃবৃন্দ পশ্চিমীদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসে অবিচল।তারা ইতিমধ্যে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সহযোগী হয়েছে। OSCE(Organisation for Security &Cooperation in Europe)র সদস্য হয়েছে। এতদিনে বিনাবাধায় ইরাক লিবিয়া লেবানন আফগানিস্তান ধ্বংস চলেছে। সিরিয়া মার্কিন সৃষ্ট জিহাদি বাহিনী প্রায় দখল করে নিয়েছে। রুশ নেতৃত্বের মধ্যে মার্কিন মোহমুক্তি আসতে শুরু করেছে। পুতিন প্রথমেই বুঝতে শুরু করে পশ্চিমী ভাওতার স্বরূপ। তারা দেখছে একে একে পূর্বতন সোভিয়েত রিপাবলিক ও ওয়ারশভুক্ত দেশগুলিকে ন্যাটোয় সামিল করছে সব প্রতিশুতি ভেঙে, রাশিয়ার অনুরোধ উপরোধ আপত্তির পাত্তা না দিয়ে। প্রথমে পোল্যাণ্ড ও পরে অন্য সব দেশ। বাকি থাকে জর্জিয়া মলদোভা ও ইউক্রেন। এদের সদস্য করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মলদোভায় একটা অংশ স্বাধীনভাবে থাকার জন্য ন্যাটোর সদস্যপদ আটকে থাকে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর মার্কিন গণতন্ত্রের উৎসব নানা ''রঙ'এর তথাকথিত মহা''বিপ্লব'' শুরু হয় পূর্বতন সো ইউ-এর অঙ্গ প্রজাতন্ত্রগুলিতে। সেই ভাবে ইউক্রেনেও হয়। কিন্তু নির্বাচনে ইয়ান্যুকোভিচ নির্বাচিত হয়। কিন্তু ''রঙিন'' পন্থীদের আপত্তিতে বাতিল হয়। পরে নির্বাচিত হয় ইউলিয়া তিমোশেংকো। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তিমোশেংকো পরের নির্বাচনে পরাজিত হয় ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের কাছে। দেশ প্রচণ্ড আর্থিক সংকটে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগ দেবার জন্য 'আন্দোলন' আরম্ভ হয়ে গেছে। আই এম এফের শর্ত মেনে ঋণ নিলে, জিনিষপত্র দাম বেড়ে যাবে তিনগুণেরও বেশি। জনমত সমীক্ষা করে দেখা গেল প্রায় ৬৬% ওই পরিস্থিতি মানতে অনিচ্ছুক।তখন রাশিয়ার সাথে চুক্তির মাধ্যমে সহজ সর্তে সামান্য সুদে প্রায় ৯ বিলিয়ন রুবল ঋণ নেয়। ২০১৪ সাল । সোচিতে শীতকালীন অলিম্পিক চলছে। মার্কিন নেতৃত্বে( বিদেশ দপ্তরের সহসচিব ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যাণ্ড) সরকার ফেলার তোড়জোড় অন্তিম ধাপে আসে। শেষ পর্যন্ত সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কিয়েভে নব্য নাৎসি ও উগ্র দক্ষিণ পন্থীদের সরকার বসায়। এসেই তারা সংবিধান বাতিল করে। রুশ ভাষা নিষিদ্ধ হয় ও একমাত্র ইউক্রেনীয় ভাষাতে শিক্ষার ফতোয়া জারী হয়। (মনে পড়তে পারে উর্দু, একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের শিক্ষার মাধ্যম ও রাষ্ট্রভাষা)।
উত্তরমুছুন